"ইসলাম" শব্দের অর্থ
"আত্মসমর্পণ", বা একক স্রষ্টার
নিকট নিজেকে সমর্পন। খ্রিষ্টিয়
সম্তম শতকে আরবের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা মুহাম্মদ (সাঃ) এই ধর্ম প্রচার করেন। কুরআন ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থ। এই
ধর্মে বিশ্বাসীদের মুসলমান বা মুসলিম বলা হয়। কুরআন আল্লাহর বাণী এবং তার কর্তৃক মুহাম্মদের নিকট প্রেরিত
— "আত্মসমর্পণ", বা একক স্রষ্টার
নিকট নিজেকে সমর্পন। খ্রিষ্টিয়
সম্তম শতকে আরবের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা মুহাম্মদ (সাঃ) এই ধর্ম প্রচার করেন। কুরআন ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থ। এই
ধর্মে বিশ্বাসীদের মুসলমান বা মুসলিম বলা হয়। কুরআন আল্লাহর বাণী এবং তার কর্তৃক মুহাম্মদের নিকট প্রেরিত
বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করেন।
তাদের বিশ্বাস অনুসারে মুহাম্মদ
শেষ নবী। হাদিসে প্রাপ্ত তাঁর নির্দেশিত কাজ ও শিক্ষার
ভিত্তিতে কুরআনকে ব্যাখ্যা করা হয়
। ইহুদি ও খ্রিস্ট ধর্মের ন্যায় ইসলাম ধর্মও আব্রাহামীয় ।[১] মুসলমানের সংখ্যা আনুমানিক ১৪০
কোটি ও তারা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী ।[২] মুহাম্মদ (সাঃ) ও তার উত্তরসূরীদের প্রচার ও যুদ্ধ জয়ের
ফলশ্রুতিতে ইসলাম দ্রুত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। [৩] বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে, বিশেষ
করে মধ্যপ্রাচ্য , উত্তর আফ্রিকা , দক্ষিণ এশিয়া , মধ্য এশিয়া , দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মুসলমানরা বাস করেন। আরবে এ
ধর্মের গোড়া পত্তন হলেও
অধিকাংশ মুসলমান |অনারব এবং আরব দেশের মুসলমানরা মোট
মুসলমান সংখ্যার শতকরা মাত্র ২০ বিশভাগ। [৪]যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলাম। [৫][৬] ধর্মবিশ্বাস মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসের মুল
ভিত্তি আল্লাহ্র একত্তবাদ।
মুসলমানরা বিশ্বাস করেন আল্লাহ
মানবজাতির জন্য তাঁর
বাণী ফেরেস্তা জীব্রাইল (আঃ)
মাধ্যমে মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট অবতীর্ণ করেন। কুরআনে বর্নীত
"খতমে নবুয়্যত" এর
ভিত্তিতে মুসলমানরা তাঁকে শেষ
বাণীবাহক (রাসূল) বলে বিশ্বাস
করেন। তারা আরও বিশ্বাস করেন,
তাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন নিখুঁত, অবিকৃত ও মানব এবং জিনজাতির
উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ আল্লাহর
সর্বশেষ বাণী, যা পুনরুত্থান দিবস
বা কেয়ামত পর্যন্ত বহাল ও
কার্যকর থাকবে। মুসলমানদের বিশ্বাস, আদম (আঃ) হতে শুরু করে আল্লাহ্-প্রেরিত সকল
পুরুষ ইসলামের বাণীই প্রচার
করে গেছেন। ইসলামের
দৃষ্টিতে ইহুদি ও খ্রিস্টান উভয়
ধর্মাবলম্বীরাই আব্রাহামের শিক্ষার ঐতিহ্য পরম্পরা। উভয়
ধর্মাবলম্বীকে কুরআনে " আহলে কিত াব " বলে সম্বোধন করা হয়েছে এবং বহুদেবতাবাদীদের
থেকে আলাদা করা হয়েছে। এই ধর্ম
দুটির গ্রন্থসমূহের বিভিন্ন
ঘটনা ও বিষয়ের উল্লেখ কুরআনেও
রয়েছে,
তবে অনেকক্ষেত্রে রয়েছে পার্থক্য । ইসলামি বিশ্বাসানুসারে এই দুই
ধর্মের অনুসারীগণ তাদের নিকট
প্রদত্ত আল্লাহ্-এর বাণীর অর্থগত
ও নানাবিধ বিকৃতসাধন করেছেন;
ইহুদিগণ তৌরাতকে (তোরাহ ) ও খ্রিস্টানগণ ইনজিলকে (নতুন বাইবেল )। মুসলমানদের বিশ্বাস ইসলাম ধর্ম আদি এবং অন্ত
এবং স্রষ্টার নিকট একমাত্র
গ্রহনযোগ্য ধর্ম। আল্লাহ মূল নিবন্ধ: আল্লাহ মুসলমানগণ বিশ্বজগতের
সৃষ্টিকরতাকে 'আল্লাহ'
বলে সম্বোধন করেন। ইসলামের মূল
বিশ্বাস হলো আল্লাহর একত্ববাদ
বা তৌহিদ । ইসলাম পরম একেশ্বরবাদী ও কোনোভাবেই
আপেক্ষিক বা বহুত্ববাদী নয়।
আল্লাহর একত্ব ইসলামের
পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথম,
যাকে বলা হয় শাহাদাহ । এটি পাঠের মাধ্যমে একজন
স্বীকার করেন যে, (এক) আল্লাহ
ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নাই
এবং (দুই) মুহাম্মদ [স.] তাঁর
প্রেরিত বাণীবাহক বা রাসূল সুরা এখলাছে আল্লাহর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে [ْﻞُﻗ
ْﻢَﻟَﻭ ْﺪِﻠَﻳ ْﻢَﻟ .ُﺪَﻤَّﺼﻟﺍ ُﻪﻠﻟﺍ .ٌﺪَﺣَﺃ ُﻪﻠﻟﺍ َﻮُﻫ
ُﻪَﻟ ْﻦُﻜَﻳ ْﻢَﻟَﻭ .ْﺪَﻟﻮُﻳ ْﻢَﻟَﻭ ْﺪِﻠَﻳ ْﻢَﻟ .ْﺪَﻟﻮُﻳ
4-1:ﺹﻼﺧﻻﺍ} [ٌﺪَﺣَﺃ ﺍًﻮُﻔُﻛ } “ "বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ
অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম
দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম
দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।"১১২:১-৪ [৭] ” ব্যুৎপত্তিগতভাবে আল্লাহ
শব্দটি "ইলাহ" থেকে আগত।
খ্রিস্টানগণ খ্রিস্ট
ধর্মকে একেশ্বরবাদী বলে দাবী কর
লেও মুসলমানগণ খ্রিস্টানদের
ত্রিত্ববাদ (trinity) বা এক ঈশ্বরের মধ্যে পিতা, পুত্র ও
পবিত্র আত্মার মিলন, এই
বিশ্বাসকে বহু-
ঈশ্বরবাদী ধারণা বলে অস্বীকার
করে। ইসলামি ধারণায় ঈশ্বর
সম্পূর্ণ অতুলনীয়, যার কোনোপ্রকার আবয়বিক বর্ণনা অসম্ভব ও
পৌত্তলিকতার সমতুল্য। এধরনের
অবয়বহীনতার ধারণা ইহুদি ও কিছু খ্রিস্টান বিশ্বাসেও দেখা যায়। মুসলমানরা তাদের
সৃষ্টিকরতাকে বর্ণনা করেন তাঁর
বিভিন্ন গুণবাচক নাম ও গুণাবলীর
মাধ্যমে। ফেরেশতা মূল নিবন্ধ: ফেরেশতা ফিরিশতা বা ফেরেশতা ফারসী শব্দ
। ফেরেশতা আরবী প্রতিশব্দ
হলো 'মালাইকা'। ফেরেশতায়
বিশ্বাস ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসের
একটি মূল নীতি। এরা অন্য সকল
সৃষ্টির মতই আল্লাহর আরেক সৃষ্টি। তাঁরা মুলত আল্লাহ্র দুত।
ফেরেশতারা নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের
মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
তারা সর্বদা ও সর্বত্র আল্লাহ্র
বিভিন্ন আদেশ পালনে রত
এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোন ক্ষমতা তাদের নেই।
ফেরেশতারা নূর তথা আলোর তৈরি।
রূহানিক জীব বলে তারা খাদ্য ও
পানীয় গ্রহণ করেন না।
তারা সুগন্ধের
অভিলাষী এবং পবিত্র স্থানে অবস্থান করেন।
তারা আল্লাহর আদেশ
অনুসারে যেকোন স্থানে গমনাগমন
ও আকৃতি পরিবর্তনের
ক্ষমতা রাখেন। ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত।
ইসলামে তাদের
কোনো শ্রেণীবিন্যাস
করা না হলেও চারজন গুরুদায়ীত্ব
অর্পিত প্রধান ফেরেশতার নাম
উল্লেখযোগ্য: হযরত জীব্রাইল (আঃ) –
ইনি আল্লাহর দূত ও সর্বশ্রেষ্ঠ
ফেরেশতা। এই ফেরেশতার নাম
তিনবার কুরআন শরীফে উল্লেখ
করা হয়েছে (সূরা ২:৯৭; ৯৮, ৬৬:৪)।
সূরা ১৬:১০২ আয়াতে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাকরূহবা রুহুল ক্বুদুস
বলা হয়েছে। আল্লাহর আদেশ-
নিষেধ এবং সংবাদ আদান-প্রদান
যেসব ফেরেশতার দায়িত্ব,
জিব্রাইল তাদের প্রধান।
জিব্রাইল-ই আল্লাহর বাণী নিয়ে নবীদের
কাছে গমনাগমন করেন। হযরত মিকাইল (আঃ) – কুরআনের
২:৯৭ আয়াতে এই ফেরেশতার নাম
উল্লেখ করা হয়েছে। ইনি বৃষ্টি ও
খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
হযরত ইসরাফিল (আঃ) – এই
ফেরেস্তা আল্লাহ্র আদেশ পাওয়া মাত্র শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার
মাধ্যমে কিয়ামত বা বিশ্বপ্রলয়
ঘটাবেন। তার কথা কুরআন
শরীফে বলা না হলেও
হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
হযরত আজরাইল (আঃ) বা মালাক আল- মাউত – ইনি মৃত্যুর ফেরেস্তা ও
প্রাণ হরণ করেন। বিশেষ শ্রেণীর
ফেরেশতা যাদেরকে কুরানে 'কিরা
মান কাতিবিন' (অর্থ- সম্মানিত
লেখকগণ)
বলা হয়েছে তাঁরা প্রতিটি মানুষের ভালো মন্দ কাজের হিসাব রাখেন।
কবরে মুনকির ও নাকির নামের দুই
ফেরেশতা মানুষকে তার কৃত কর্মের
ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মালিক নামের ফেরেশতা নরক
বা জাহান্নামের রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং রিদওয়ান নামের আরেক
ফেরেশতা জান্নাত বা বেহেশতের
দেখভাল করেন। ইসলাম, খ্রিস্টান
ও ইহুদী ধর্ম ছাড়া হিন্দু ধর্মেও
ফেরেশতা তথা স্বর্গীয় দূতদের
অস্তিত্ত্বের কথা বলা হয়েছে। কুরআন মূল নিবন্ধ: কুরআন হাত্তাত আজিজ এফেন্দির হস্তলিখিত - কুরআনের প্রথম সুরা। কুরআন মুসলমানদের মূল ধর্মগ্রন্থ।
তাদের বিশ্বাসে কুরআন স্রষ্টার
অবিকৃত, হুবহু বক্তব্য। এর
আগে স্রষ্টা প্রত্যেক
জাতিকে বিভিন্ন গ্রন্থ
পাঠিয়েছেন, কিন্তু সেগুলোকে বিকৃত করা হয়। বাংলায়
কুরআনকে আরো বলা হয় "আল-কুরআন"
বা "কুরআন শরীফ"। "কুরআন"-এর
জায়গায় বানানভেদে "কোরআন"
বা "কোরান"ও লিখতে দেখা যায়। ইসলাম ধর্মমতে, জীব্রাইল
ফেরেস্তার মাধ্যমে মুহাম্মদের
(সাঃ) নিকট ৬১০ খ্রিস্টাব্দ
থেকে ৬ই জুলাই, ৬৩২
খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু
অবধি বিভিন্ন সময়ে স্রষ্ঠা তাঁর বাণী অবতীর্ণ করেন। এই
বাণী তাঁর অন্তস্থ ছিলো,
সংরক্ষণের জন্য তাঁর অনুসারীদের
দ্বারা পাথর, পাতা ও চামড়ার
উপর লিখেও রাখা হয়। অধিকাংশ মুসলমান কুরআনের
যেকোনো পাণ্ডুলিপিকে অত্যন্ত
শ্রদ্ধা করেন, স্পর্শ করার পূর্বে ওজু করে নেন। কুরআন জীর্ণ ও ব্যবহার
অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবর্জনা হিসে
বে ফেলে দেয়া হয় না,
বরং পুড়িয়ে ফেলা হয় বা পরিষ্কার
পানিতে ফেলে দেয়া হয়। অনেক মুসলমানই কুরআনের কিছু অংশ
এর মূল ভাষা আরবিতে মুখস্ত
করে থাকেন, কমপক্ষে যেটুকু আয়াত
নামাজ আদায়ের জন্য পড়া হয়।
সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্তকারীদের হাফিজ (সংরক্ষণকারী) বলা হয়। মুসলমানরা আরবি কুরআনকেই
কেবলমাত্র নিখুঁত বলে বিশ্বাস
করেন। সকল অনুবাদ মানুষের কাজ
বিধায় এতে ভুল-ত্রুটি থাকার
সম্ভাবনা থেকে যায়
এবং বিষয়বস্তুর মূল প্রেরণা ও সঠিক
উপস্থাপনা অনুবাদকর্মে অনুপস্থিত
থাকতে পারে বিধায়
অনুবাদসমূহকে আরবি কুরআনের
কখনোই সমতুল্য ও সমান নিখুঁত গণ্য
করা হয় না। মুহাম্মদ (সাঃ) মূল নিবন্ধ: মুহাম্মদ মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন তৎকালীন আরবের বহুল মর্যাদাপুর্ন কুরাঈশ
বংশের একজন। নবুয়ত প্রাপ্তির
পূর্বে তাঁর বিশেষ গুনের
কারনে তিনি আরবে "আল-আমীন
বা "বিশ্বস্ত" উপাধিতে ভূষিত হন।
স্রষ্টার নিকট হতে নবুয়ত প্রাপ্তির পর তিনি ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়
বা উম্মাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
তাঁকে ইসলামের শ্রেষ্ঠ বাণীবাহক
(নবী) হিসেবে শ্রদ্ধা ও সম্মান
করা হয়।
মুসলমানরা তাঁকে একটি নতুন ধর্মের প্রবর্তক হিসেবে দেখেন
না। তাঁদের কাছে মুহাম্মদ (সাঃ)
বরং আল্লাহ প্রেরিত নবী-
পরম্পরার শেষ নবী, যিনি আদম
(আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) ও অন্যান্য নবী (আঃ) প্রচারিত
একেশ্বরবাদী ধর্মেরই,
যা বিভিন্ন সময় পরিবর্তিত ও
বিকৃত হয়েছে,
ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন
এবং ইসলামকে শেষ প্রেরিত ধর্ম হিসেবে আল্লাহর পক্ষ
থেকে উপস্থাপন করেন। ইসলাম ধর্মমতে, তিনি চল্লিশ বছর
বয়স হতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২৩ বছর
যাবৎ ফেরেশতা জীব্রাইল (আঃ) মারফত ঐশ্বী বাণী লাভ করেন। এই
বাণীসমূহের একত্ররূপ হলো কুরআন,
যা তিনি মুখস্ত করেন ও তাঁর
অনুসারীদের (সাহাবী)
দিয়ে লিপিবদ্ধ করান। কারণ,
তিনি নিজে একজন অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ ছিলেন। সকল মুসলমান
বিশ্বাস করেন মুহাম্মদ (সাঃ) এই
বাণী নির্ভুলভাবে প্রচার
করেছেন: “ "সে যদি আমার
নামে কোনো কথা রচনা করতো,
তবে আমি তাঁর ডান হাত
ধরে ফেলতাম, অতঃপর
কেটে দিতাম তাঁর গ্রীবা।
তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।" ৬৯:৪৪-৪৭ [৭] ” মুহাম্মদ (সাঃ) ও সর্বোপরি সকল
নবী (সাঃ) কখনো ভুল করেননি, এমন
বিশ্বাস সুন্নি মতে না থাকলেও শিয়ারা এমন বিশ্বাস সকল নবী ও তাদের ইমামদের ক্ষেত্রে পোষণ
করে। মুহাম্মদের (সাঃ) ভুল
করা বা আল্লাহর নিকট
অসন্তোষজনক কাজ করার উদাহরণ
হিসেবে নিম্নলিখিত আয়াতটি আলোচনা করা হয় [৮]: “ "হে নবী, আল্লাহ আপনার
জন্যে যা হালাল করেছেন,
আপনি আপনার
স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্য
তা নিজের উপর হারাম করছেন
কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।" ৬৬:১ [৭] ” এভাবে কুরআনের আরও কয়েক
জায়গায় মুহাম্মদের (সাঃ) কাজ
শুধরে দেয়া হয়েছে। এই
আয়াতগুলো আল্লাহর বাণী নির্ভুল
এবং অপরিবর্তিতভাবে প্রচার
করার ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কারণ
নির্ভুলভাবে প্রচারের
ইচ্ছা না থাকলে নিজের অসম্মান
হয় এমন কিছুই তিনি প্রচার করতেন
না। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন,
মানুষ হিসেবে সিদ্ধান্ত দিতে হলে মুহাম্মদ (সাঃ) ভুল
করতেন, কিন্তু ঐশ্বিক
বাণী প্রচারের
ক্ষেত্রে তিনি কখনও ভুল করেননি। মুসলমানদেরকে শেষ বাণীবাহক
মুহাম্মদের নাম উচ্চারণ করার
সাথে সাথে "সাল্লাল্লা-হু
'আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বলতে হয়।
এর অর্থ: তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত
হোক। একে বলা হয় দুরুদ শরীফ। এছাড়াও আরও অনেক দুরুদ
হাদীসে বর্ণীত আছে। তাঁর
মধ্যে এটাই সর্বপেক্ষা ছোট।
কোনো এক বৈঠকে তাঁর নাম
নিলে দুরুদ একবার বলা অবশ্য
কর্তব্য (ওয়াজিব)। এছাড়াও যতবার তাঁর নাম উচ্চারিত হবে,
ততবার দুরুদ
বলা বা মনে মনে বলা সুন্নত।
ইসলাম এভাবেই
মুসলমানদেরকে দোয়া'র
শিক্ষা দেয়। হাদিস মূল নিবন্ধ: হাদিস 'হাদীস' (ﺙﻴﺪﺤﻠﺍ) আরবি শব্দ। এর
আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- কথা, বাণী,
কথা-বার্তা, আলোচনা,
কথিকা,সংবাদ, খবর,
কাহিনী ইত্যাদি। [আধুনিক
আরবি বাংলা অভিধান, ড.ফজলুর রহমান,রিয়াদ প্রকাশণী ২০০৫]
ইসলামী পরিভাষায় মুহাম্মদের
(সাঃ) কথা, কাজ ও অনুমোদন
এবং তাঁর দৈহিক ও চারিত্রিক
যাবতীয় বৈশিষ্ট্যকে হাদীস বলে।
[ মুহাম্মদের (সাঃ) জীবদ্দশায় তাঁর সহচররা তাঁর হাদীসসমূহ
মুখস্থ করে সংরক্ষণ করতেন। তখনও
হাদীস লেখার অনুমতি ছিলো না,
যাতে হাদীস এবং কোরআন পরস্পর
মিলে না যায়। মুহাম্মদের (সাঃ) কথা-কাজসমূহের
বিবরণ লোকপরম্পরায় সংগ্রহ ও
সংকলন করে সংরক্ষণ করা হলে তাঁর
বক্তব্যসমূহ পরবর্তি প্রজন্মের
কাছে উন্মুক্ত হয়। বিভিন্ন
বিখ্যাত পন্ডিতেরা এই কাজে ব্রতী ছিলেন। তাঁদের
সংকলিত সেসব হাদিস সংকলন
গ্রন্থের
মধ্যে ছয়খানা গ্রন্থকে 'বিশুদ্ধ
হাদিস সংকলন' (সিয়াহ সিত্তাহ)
আখ্যা দেয়া হয়। তাই বলে এটা ভাবা ভুল হবে যে, এই
ছয়খানা গ্রন্থের বাইরে আর
কোনো বিশুদ্ধ হাদিস নেই। এর
বাইরেও বহু বিশুদ্ধ হাদিসের
সংকলন রয়েছে। হাদিসের
বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের বিভিন্ন মাপকাঠি রয়েছে।
তন্মধ্যে একটি হলো সনদ
বা "হাদিস প্রাপ্তির সুত্র"
যাচাই। কেয়ামত কেয়ামতে বা শেষ বিচারের
দিনে বিশ্বাস ইসলামের মূল
বিশ্বাসগুলির একটি| ইসলাম
ধর্মে কেয়ামত বা কিয়ামত
হলো সেই দিন যে দিন এই বিশ্ব
ব্রহ্মান্ডে আল্লাহ সৃষ্ট সকল জীবকে পুনরুত্থান
করা হবে বিচারের জন্য| সকল
জীবকে তার কৃতকর্মের হিসাব
দেয়ার জন্যে এবং তার কৃতকর্মের
ফলাফল শেষে পুরস্কার বা শাস্তির
পরিমান নির্ধারণ শেষে জান্নাত/ বেহেশত/স্বর্গ
কিংবা জাহান্নাম/দোযখ/নরক এ
পাঠানো হবে| ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহ ইসলামের ৫টি মূল স্তম্ভ রয়েছে।
এগুলো হলো- কলেমা (বিশ্বাস) নামাজ (প্রার্থনা) রোজা (উপবাস) যাকাত (দান) হজ্জ্ব (মক্কা ভ্রমণ) ধর্মগ্রন্থ মূল নিবন্ধ: কুরআন মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থের নাম কুরআন। এটি একটি আসমানী গ্রন্থ। ইসলামী ইতিহাস অনুসারে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড
অংশে হযরত মুহাম্মদের (সাঃ)
নিকট অবতীর্ণ হয়। পবিত্র
কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা বা অধ্যায় আছে। আয়াত বা অনুচ্ছেদ
সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি। এটি মূল
আরবি ভাষায় অবর্তীর্ণ হয়।
আল্লাহ তা'আল সূরা আল হিজর এ
বলেছেনঃ “ আমি স্বয়ং এ উপদেশগ্রন্থ অবতরণ
করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। --- (আয়াত ৯)
তাদের বিশ্বাস অনুসারে মুহাম্মদ
শেষ নবী। হাদিসে প্রাপ্ত তাঁর নির্দেশিত কাজ ও শিক্ষার
ভিত্তিতে কুরআনকে ব্যাখ্যা করা হয়
। ইহুদি ও খ্রিস্ট ধর্মের ন্যায় ইসলাম ধর্মও আব্রাহামীয় ।[১] মুসলমানের সংখ্যা আনুমানিক ১৪০
কোটি ও তারা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী ।[২] মুহাম্মদ (সাঃ) ও তার উত্তরসূরীদের প্রচার ও যুদ্ধ জয়ের
ফলশ্রুতিতে ইসলাম দ্রুত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। [৩] বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে, বিশেষ
করে মধ্যপ্রাচ্য , উত্তর আফ্রিকা , দক্ষিণ এশিয়া , মধ্য এশিয়া , দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মুসলমানরা বাস করেন। আরবে এ
ধর্মের গোড়া পত্তন হলেও
অধিকাংশ মুসলমান |অনারব এবং আরব দেশের মুসলমানরা মোট
মুসলমান সংখ্যার শতকরা মাত্র ২০ বিশভাগ। [৪]যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলাম। [৫][৬] ধর্মবিশ্বাস মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসের মুল
ভিত্তি আল্লাহ্র একত্তবাদ।
মুসলমানরা বিশ্বাস করেন আল্লাহ
মানবজাতির জন্য তাঁর
বাণী ফেরেস্তা জীব্রাইল (আঃ)
মাধ্যমে মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট অবতীর্ণ করেন। কুরআনে বর্নীত
"খতমে নবুয়্যত" এর
ভিত্তিতে মুসলমানরা তাঁকে শেষ
বাণীবাহক (রাসূল) বলে বিশ্বাস
করেন। তারা আরও বিশ্বাস করেন,
তাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন নিখুঁত, অবিকৃত ও মানব এবং জিনজাতির
উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ আল্লাহর
সর্বশেষ বাণী, যা পুনরুত্থান দিবস
বা কেয়ামত পর্যন্ত বহাল ও
কার্যকর থাকবে। মুসলমানদের বিশ্বাস, আদম (আঃ) হতে শুরু করে আল্লাহ্-প্রেরিত সকল
পুরুষ ইসলামের বাণীই প্রচার
করে গেছেন। ইসলামের
দৃষ্টিতে ইহুদি ও খ্রিস্টান উভয়
ধর্মাবলম্বীরাই আব্রাহামের শিক্ষার ঐতিহ্য পরম্পরা। উভয়
ধর্মাবলম্বীকে কুরআনে " আহলে কিত াব " বলে সম্বোধন করা হয়েছে এবং বহুদেবতাবাদীদের
থেকে আলাদা করা হয়েছে। এই ধর্ম
দুটির গ্রন্থসমূহের বিভিন্ন
ঘটনা ও বিষয়ের উল্লেখ কুরআনেও
রয়েছে,
তবে অনেকক্ষেত্রে রয়েছে পার্থক্য । ইসলামি বিশ্বাসানুসারে এই দুই
ধর্মের অনুসারীগণ তাদের নিকট
প্রদত্ত আল্লাহ্-এর বাণীর অর্থগত
ও নানাবিধ বিকৃতসাধন করেছেন;
ইহুদিগণ তৌরাতকে (তোরাহ ) ও খ্রিস্টানগণ ইনজিলকে (নতুন বাইবেল )। মুসলমানদের বিশ্বাস ইসলাম ধর্ম আদি এবং অন্ত
এবং স্রষ্টার নিকট একমাত্র
গ্রহনযোগ্য ধর্ম। আল্লাহ মূল নিবন্ধ: আল্লাহ মুসলমানগণ বিশ্বজগতের
সৃষ্টিকরতাকে 'আল্লাহ'
বলে সম্বোধন করেন। ইসলামের মূল
বিশ্বাস হলো আল্লাহর একত্ববাদ
বা তৌহিদ । ইসলাম পরম একেশ্বরবাদী ও কোনোভাবেই
আপেক্ষিক বা বহুত্ববাদী নয়।
আল্লাহর একত্ব ইসলামের
পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথম,
যাকে বলা হয় শাহাদাহ । এটি পাঠের মাধ্যমে একজন
স্বীকার করেন যে, (এক) আল্লাহ
ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নাই
এবং (দুই) মুহাম্মদ [স.] তাঁর
প্রেরিত বাণীবাহক বা রাসূল সুরা এখলাছে আল্লাহর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে [ْﻞُﻗ
ْﻢَﻟَﻭ ْﺪِﻠَﻳ ْﻢَﻟ .ُﺪَﻤَّﺼﻟﺍ ُﻪﻠﻟﺍ .ٌﺪَﺣَﺃ ُﻪﻠﻟﺍ َﻮُﻫ
ُﻪَﻟ ْﻦُﻜَﻳ ْﻢَﻟَﻭ .ْﺪَﻟﻮُﻳ ْﻢَﻟَﻭ ْﺪِﻠَﻳ ْﻢَﻟ .ْﺪَﻟﻮُﻳ
4-1:ﺹﻼﺧﻻﺍ} [ٌﺪَﺣَﺃ ﺍًﻮُﻔُﻛ } “ "বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ
অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম
দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম
দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।"১১২:১-৪ [৭] ” ব্যুৎপত্তিগতভাবে আল্লাহ
শব্দটি "ইলাহ" থেকে আগত।
খ্রিস্টানগণ খ্রিস্ট
ধর্মকে একেশ্বরবাদী বলে দাবী কর
লেও মুসলমানগণ খ্রিস্টানদের
ত্রিত্ববাদ (trinity) বা এক ঈশ্বরের মধ্যে পিতা, পুত্র ও
পবিত্র আত্মার মিলন, এই
বিশ্বাসকে বহু-
ঈশ্বরবাদী ধারণা বলে অস্বীকার
করে। ইসলামি ধারণায় ঈশ্বর
সম্পূর্ণ অতুলনীয়, যার কোনোপ্রকার আবয়বিক বর্ণনা অসম্ভব ও
পৌত্তলিকতার সমতুল্য। এধরনের
অবয়বহীনতার ধারণা ইহুদি ও কিছু খ্রিস্টান বিশ্বাসেও দেখা যায়। মুসলমানরা তাদের
সৃষ্টিকরতাকে বর্ণনা করেন তাঁর
বিভিন্ন গুণবাচক নাম ও গুণাবলীর
মাধ্যমে। ফেরেশতা মূল নিবন্ধ: ফেরেশতা ফিরিশতা বা ফেরেশতা ফারসী শব্দ
। ফেরেশতা আরবী প্রতিশব্দ
হলো 'মালাইকা'। ফেরেশতায়
বিশ্বাস ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসের
একটি মূল নীতি। এরা অন্য সকল
সৃষ্টির মতই আল্লাহর আরেক সৃষ্টি। তাঁরা মুলত আল্লাহ্র দুত।
ফেরেশতারা নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের
মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
তারা সর্বদা ও সর্বত্র আল্লাহ্র
বিভিন্ন আদেশ পালনে রত
এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোন ক্ষমতা তাদের নেই।
ফেরেশতারা নূর তথা আলোর তৈরি।
রূহানিক জীব বলে তারা খাদ্য ও
পানীয় গ্রহণ করেন না।
তারা সুগন্ধের
অভিলাষী এবং পবিত্র স্থানে অবস্থান করেন।
তারা আল্লাহর আদেশ
অনুসারে যেকোন স্থানে গমনাগমন
ও আকৃতি পরিবর্তনের
ক্ষমতা রাখেন। ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত।
ইসলামে তাদের
কোনো শ্রেণীবিন্যাস
করা না হলেও চারজন গুরুদায়ীত্ব
অর্পিত প্রধান ফেরেশতার নাম
উল্লেখযোগ্য: হযরত জীব্রাইল (আঃ) –
ইনি আল্লাহর দূত ও সর্বশ্রেষ্ঠ
ফেরেশতা। এই ফেরেশতার নাম
তিনবার কুরআন শরীফে উল্লেখ
করা হয়েছে (সূরা ২:৯৭; ৯৮, ৬৬:৪)।
সূরা ১৬:১০২ আয়াতে জিবরাইল ফেরেশতাকে পাকরূহবা রুহুল ক্বুদুস
বলা হয়েছে। আল্লাহর আদেশ-
নিষেধ এবং সংবাদ আদান-প্রদান
যেসব ফেরেশতার দায়িত্ব,
জিব্রাইল তাদের প্রধান।
জিব্রাইল-ই আল্লাহর বাণী নিয়ে নবীদের
কাছে গমনাগমন করেন। হযরত মিকাইল (আঃ) – কুরআনের
২:৯৭ আয়াতে এই ফেরেশতার নাম
উল্লেখ করা হয়েছে। ইনি বৃষ্টি ও
খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
হযরত ইসরাফিল (আঃ) – এই
ফেরেস্তা আল্লাহ্র আদেশ পাওয়া মাত্র শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার
মাধ্যমে কিয়ামত বা বিশ্বপ্রলয়
ঘটাবেন। তার কথা কুরআন
শরীফে বলা না হলেও
হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
হযরত আজরাইল (আঃ) বা মালাক আল- মাউত – ইনি মৃত্যুর ফেরেস্তা ও
প্রাণ হরণ করেন। বিশেষ শ্রেণীর
ফেরেশতা যাদেরকে কুরানে 'কিরা
মান কাতিবিন' (অর্থ- সম্মানিত
লেখকগণ)
বলা হয়েছে তাঁরা প্রতিটি মানুষের ভালো মন্দ কাজের হিসাব রাখেন।
কবরে মুনকির ও নাকির নামের দুই
ফেরেশতা মানুষকে তার কৃত কর্মের
ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মালিক নামের ফেরেশতা নরক
বা জাহান্নামের রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং রিদওয়ান নামের আরেক
ফেরেশতা জান্নাত বা বেহেশতের
দেখভাল করেন। ইসলাম, খ্রিস্টান
ও ইহুদী ধর্ম ছাড়া হিন্দু ধর্মেও
ফেরেশতা তথা স্বর্গীয় দূতদের
অস্তিত্ত্বের কথা বলা হয়েছে। কুরআন মূল নিবন্ধ: কুরআন হাত্তাত আজিজ এফেন্দির হস্তলিখিত - কুরআনের প্রথম সুরা। কুরআন মুসলমানদের মূল ধর্মগ্রন্থ।
তাদের বিশ্বাসে কুরআন স্রষ্টার
অবিকৃত, হুবহু বক্তব্য। এর
আগে স্রষ্টা প্রত্যেক
জাতিকে বিভিন্ন গ্রন্থ
পাঠিয়েছেন, কিন্তু সেগুলোকে বিকৃত করা হয়। বাংলায়
কুরআনকে আরো বলা হয় "আল-কুরআন"
বা "কুরআন শরীফ"। "কুরআন"-এর
জায়গায় বানানভেদে "কোরআন"
বা "কোরান"ও লিখতে দেখা যায়। ইসলাম ধর্মমতে, জীব্রাইল
ফেরেস্তার মাধ্যমে মুহাম্মদের
(সাঃ) নিকট ৬১০ খ্রিস্টাব্দ
থেকে ৬ই জুলাই, ৬৩২
খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু
অবধি বিভিন্ন সময়ে স্রষ্ঠা তাঁর বাণী অবতীর্ণ করেন। এই
বাণী তাঁর অন্তস্থ ছিলো,
সংরক্ষণের জন্য তাঁর অনুসারীদের
দ্বারা পাথর, পাতা ও চামড়ার
উপর লিখেও রাখা হয়। অধিকাংশ মুসলমান কুরআনের
যেকোনো পাণ্ডুলিপিকে অত্যন্ত
শ্রদ্ধা করেন, স্পর্শ করার পূর্বে ওজু করে নেন। কুরআন জীর্ণ ও ব্যবহার
অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবর্জনা হিসে
বে ফেলে দেয়া হয় না,
বরং পুড়িয়ে ফেলা হয় বা পরিষ্কার
পানিতে ফেলে দেয়া হয়। অনেক মুসলমানই কুরআনের কিছু অংশ
এর মূল ভাষা আরবিতে মুখস্ত
করে থাকেন, কমপক্ষে যেটুকু আয়াত
নামাজ আদায়ের জন্য পড়া হয়।
সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্তকারীদের হাফিজ (সংরক্ষণকারী) বলা হয়। মুসলমানরা আরবি কুরআনকেই
কেবলমাত্র নিখুঁত বলে বিশ্বাস
করেন। সকল অনুবাদ মানুষের কাজ
বিধায় এতে ভুল-ত্রুটি থাকার
সম্ভাবনা থেকে যায়
এবং বিষয়বস্তুর মূল প্রেরণা ও সঠিক
উপস্থাপনা অনুবাদকর্মে অনুপস্থিত
থাকতে পারে বিধায়
অনুবাদসমূহকে আরবি কুরআনের
কখনোই সমতুল্য ও সমান নিখুঁত গণ্য
করা হয় না। মুহাম্মদ (সাঃ) মূল নিবন্ধ: মুহাম্মদ মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন তৎকালীন আরবের বহুল মর্যাদাপুর্ন কুরাঈশ
বংশের একজন। নবুয়ত প্রাপ্তির
পূর্বে তাঁর বিশেষ গুনের
কারনে তিনি আরবে "আল-আমীন
বা "বিশ্বস্ত" উপাধিতে ভূষিত হন।
স্রষ্টার নিকট হতে নবুয়ত প্রাপ্তির পর তিনি ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়
বা উম্মাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
তাঁকে ইসলামের শ্রেষ্ঠ বাণীবাহক
(নবী) হিসেবে শ্রদ্ধা ও সম্মান
করা হয়।
মুসলমানরা তাঁকে একটি নতুন ধর্মের প্রবর্তক হিসেবে দেখেন
না। তাঁদের কাছে মুহাম্মদ (সাঃ)
বরং আল্লাহ প্রেরিত নবী-
পরম্পরার শেষ নবী, যিনি আদম
(আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) ও অন্যান্য নবী (আঃ) প্রচারিত
একেশ্বরবাদী ধর্মেরই,
যা বিভিন্ন সময় পরিবর্তিত ও
বিকৃত হয়েছে,
ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন
এবং ইসলামকে শেষ প্রেরিত ধর্ম হিসেবে আল্লাহর পক্ষ
থেকে উপস্থাপন করেন। ইসলাম ধর্মমতে, তিনি চল্লিশ বছর
বয়স হতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২৩ বছর
যাবৎ ফেরেশতা জীব্রাইল (আঃ) মারফত ঐশ্বী বাণী লাভ করেন। এই
বাণীসমূহের একত্ররূপ হলো কুরআন,
যা তিনি মুখস্ত করেন ও তাঁর
অনুসারীদের (সাহাবী)
দিয়ে লিপিবদ্ধ করান। কারণ,
তিনি নিজে একজন অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ ছিলেন। সকল মুসলমান
বিশ্বাস করেন মুহাম্মদ (সাঃ) এই
বাণী নির্ভুলভাবে প্রচার
করেছেন: “ "সে যদি আমার
নামে কোনো কথা রচনা করতো,
তবে আমি তাঁর ডান হাত
ধরে ফেলতাম, অতঃপর
কেটে দিতাম তাঁর গ্রীবা।
তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।" ৬৯:৪৪-৪৭ [৭] ” মুহাম্মদ (সাঃ) ও সর্বোপরি সকল
নবী (সাঃ) কখনো ভুল করেননি, এমন
বিশ্বাস সুন্নি মতে না থাকলেও শিয়ারা এমন বিশ্বাস সকল নবী ও তাদের ইমামদের ক্ষেত্রে পোষণ
করে। মুহাম্মদের (সাঃ) ভুল
করা বা আল্লাহর নিকট
অসন্তোষজনক কাজ করার উদাহরণ
হিসেবে নিম্নলিখিত আয়াতটি আলোচনা করা হয় [৮]: “ "হে নবী, আল্লাহ আপনার
জন্যে যা হালাল করেছেন,
আপনি আপনার
স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্য
তা নিজের উপর হারাম করছেন
কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।" ৬৬:১ [৭] ” এভাবে কুরআনের আরও কয়েক
জায়গায় মুহাম্মদের (সাঃ) কাজ
শুধরে দেয়া হয়েছে। এই
আয়াতগুলো আল্লাহর বাণী নির্ভুল
এবং অপরিবর্তিতভাবে প্রচার
করার ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কারণ
নির্ভুলভাবে প্রচারের
ইচ্ছা না থাকলে নিজের অসম্মান
হয় এমন কিছুই তিনি প্রচার করতেন
না। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন,
মানুষ হিসেবে সিদ্ধান্ত দিতে হলে মুহাম্মদ (সাঃ) ভুল
করতেন, কিন্তু ঐশ্বিক
বাণী প্রচারের
ক্ষেত্রে তিনি কখনও ভুল করেননি। মুসলমানদেরকে শেষ বাণীবাহক
মুহাম্মদের নাম উচ্চারণ করার
সাথে সাথে "সাল্লাল্লা-হু
'আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বলতে হয়।
এর অর্থ: তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত
হোক। একে বলা হয় দুরুদ শরীফ। এছাড়াও আরও অনেক দুরুদ
হাদীসে বর্ণীত আছে। তাঁর
মধ্যে এটাই সর্বপেক্ষা ছোট।
কোনো এক বৈঠকে তাঁর নাম
নিলে দুরুদ একবার বলা অবশ্য
কর্তব্য (ওয়াজিব)। এছাড়াও যতবার তাঁর নাম উচ্চারিত হবে,
ততবার দুরুদ
বলা বা মনে মনে বলা সুন্নত।
ইসলাম এভাবেই
মুসলমানদেরকে দোয়া'র
শিক্ষা দেয়। হাদিস মূল নিবন্ধ: হাদিস 'হাদীস' (ﺙﻴﺪﺤﻠﺍ) আরবি শব্দ। এর
আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- কথা, বাণী,
কথা-বার্তা, আলোচনা,
কথিকা,সংবাদ, খবর,
কাহিনী ইত্যাদি। [আধুনিক
আরবি বাংলা অভিধান, ড.ফজলুর রহমান,রিয়াদ প্রকাশণী ২০০৫]
ইসলামী পরিভাষায় মুহাম্মদের
(সাঃ) কথা, কাজ ও অনুমোদন
এবং তাঁর দৈহিক ও চারিত্রিক
যাবতীয় বৈশিষ্ট্যকে হাদীস বলে।
[ মুহাম্মদের (সাঃ) জীবদ্দশায় তাঁর সহচররা তাঁর হাদীসসমূহ
মুখস্থ করে সংরক্ষণ করতেন। তখনও
হাদীস লেখার অনুমতি ছিলো না,
যাতে হাদীস এবং কোরআন পরস্পর
মিলে না যায়। মুহাম্মদের (সাঃ) কথা-কাজসমূহের
বিবরণ লোকপরম্পরায় সংগ্রহ ও
সংকলন করে সংরক্ষণ করা হলে তাঁর
বক্তব্যসমূহ পরবর্তি প্রজন্মের
কাছে উন্মুক্ত হয়। বিভিন্ন
বিখ্যাত পন্ডিতেরা এই কাজে ব্রতী ছিলেন। তাঁদের
সংকলিত সেসব হাদিস সংকলন
গ্রন্থের
মধ্যে ছয়খানা গ্রন্থকে 'বিশুদ্ধ
হাদিস সংকলন' (সিয়াহ সিত্তাহ)
আখ্যা দেয়া হয়। তাই বলে এটা ভাবা ভুল হবে যে, এই
ছয়খানা গ্রন্থের বাইরে আর
কোনো বিশুদ্ধ হাদিস নেই। এর
বাইরেও বহু বিশুদ্ধ হাদিসের
সংকলন রয়েছে। হাদিসের
বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের বিভিন্ন মাপকাঠি রয়েছে।
তন্মধ্যে একটি হলো সনদ
বা "হাদিস প্রাপ্তির সুত্র"
যাচাই। কেয়ামত কেয়ামতে বা শেষ বিচারের
দিনে বিশ্বাস ইসলামের মূল
বিশ্বাসগুলির একটি| ইসলাম
ধর্মে কেয়ামত বা কিয়ামত
হলো সেই দিন যে দিন এই বিশ্ব
ব্রহ্মান্ডে আল্লাহ সৃষ্ট সকল জীবকে পুনরুত্থান
করা হবে বিচারের জন্য| সকল
জীবকে তার কৃতকর্মের হিসাব
দেয়ার জন্যে এবং তার কৃতকর্মের
ফলাফল শেষে পুরস্কার বা শাস্তির
পরিমান নির্ধারণ শেষে জান্নাত/ বেহেশত/স্বর্গ
কিংবা জাহান্নাম/দোযখ/নরক এ
পাঠানো হবে| ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহ ইসলামের ৫টি মূল স্তম্ভ রয়েছে।
এগুলো হলো- কলেমা (বিশ্বাস) নামাজ (প্রার্থনা) রোজা (উপবাস) যাকাত (দান) হজ্জ্ব (মক্কা ভ্রমণ) ধর্মগ্রন্থ মূল নিবন্ধ: কুরআন মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থের নাম কুরআন। এটি একটি আসমানী গ্রন্থ। ইসলামী ইতিহাস অনুসারে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড
অংশে হযরত মুহাম্মদের (সাঃ)
নিকট অবতীর্ণ হয়। পবিত্র
কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা বা অধ্যায় আছে। আয়াত বা অনুচ্ছেদ
সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি। এটি মূল
আরবি ভাষায় অবর্তীর্ণ হয়।
আল্লাহ তা'আল সূরা আল হিজর এ
বলেছেনঃ “ আমি স্বয়ং এ উপদেশগ্রন্থ অবতরণ
করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। --- (আয়াত ৯)
Comments
Post a Comment