Skip to main content

সাতভাইখুম

অমিয়াখুম থেকে মাত্র ১০ মিনিটের
রাস্তা পার হলেই আপনার সাথে দেখা
হয়ে যাবে আরেক সপ্তাশ্চার্য
সাতভাইখুম । এই ফাকে আপনার জীবনের
সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ভ্রমণের
অভিজ্ঞতাও হয়ে যাবে।
মাটি থেকে তিন-চার ফুট উঁচুতে
বানানো চারপাশ খোলা টংঘরে, এখানে
মে মাসের প্রচণ্ড গরমের রাতে
শীতে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে হয়।
তার ওপর মাঝরাতের আকাশে চাঁদের
তার ঘোলাটে হলদে আলো দেওয়া।
জায়গার নাম জিনাপাড়া। অমিয়াখুম
যাওয়ার পথে পড়ে।
অমিয়াখুম যেতে পাড়ি দিতে হয় থানচি
থেকে রেমাক্রি পর্যন্ত পাথুরে
সাঙ্গু নদী। নদীর তলদেশে থাকা
পাথরকণা মুক্তোদানার মত। এই পথেই
পড়ে তিন্দু। তিন্দুর পরের জায়গা
রাজা পাথর এলাকা। বর্ষাকালে এখানে
দুর্ঘটনা ঘটার কারণে স্থানীয়দের
পূজনীয় ভয়ংকর পাথরের এই রাজ্য। এই
পথ হেঁটে পেরিয়ে নাফাখুম পার হয়ে
বিকেলের মধ্যেই জিনাপাড়ায়।
বান্দরবানের এই গ্রামের মানুষ
এখনো আদিম, সহজ-সরল, কিছু খেতে
চাইলে পাকা পেঁপে নিয়ে আসে।
জিনাপাড়ায় কোনো বাথরুম নেই।
পরদিন সকালে আমিয়াখুম দেখার
উদ্দেশ্যে যাত্রা। অমিয়াখুম
যাওয়ার পথে উঁচু উঁচু পাহাড় ডিঙাতে
হয়। এখানে সাপ, পাহাড়ী প্রাণীর
দেখা মেলে। কিছুদূর গিয়ে খাড়া
পাহাড়ের রাস্তা ধরে নামতে হয় প্রায়
হাজার ফুটের মত। নামার সময় সঙ্গে রশি
থাকলে ভালো। ৪০ মিনিটে পাহাড়
থেকে নেমে প্রবেশ ঘন জঙ্গলের
রাজ্যে। সামনে আকাশছোঁয়া গোল
গোল পাথরের দেয়াল, তার মধ্য দিয়ে
বয়ে চলে সবুজ পানির কোলাহল।
এখানে-ওখানে জমে সেই পানি রূপ
নেয় একেকটা লেগুনে। স্বচ্ছ সেই
লেগুনের সাঁতরে বেড়ায় বিশাল
বিশাল সব মাছের দল। গাইড জানায় বামে
অমিয়াখুম আর ডানে সাতভাইখুম। এর
চেয়েও সুন্দর।
জল-পাথরের আড্ডা ছেড়ে এ পাথরের
ওপর দিয়ে ও তলা দিয়ে যখন গন্তব্যে
তখন ভরদুপুরে অদ্ভুত রহস্যলাগা
সৌন্দর্য নিয়ে মেলে ধরেছে
পাহাড়ি ঝরনা অমিয়াখুম। এমন পানিতে
সাঁতার না কেটে পারা যায় না। সঙ্গে
লাইফ জ্যাকেট থাকলে ভালো।
অমিয়াখুমের পাহাড়ে থাকা সিঁড়ির
ধাপ এত বড় যে একেক ধাপে তাঁবু
টানিয়ে ঘুমানো যায়।
এরপর অমিয়াখুম থেকে একটু ওপরের
দিকে বাঁশের ভেলায় ১০ মিনিটে
সাতভাইখুমে। জীবনের সবচেয়ে
রোমাঞ্চকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও হল।
এখানে একটা পাথরের দুর্গে প্রবেশ
করে দেখা যায় পাথরের সভা। এখানে
তিন্দুর মতো বড় বড় পাথর, আছে
অমিয়াখুমের মতো সিঁড়ি সিঁড়ি ঝরনা,
বগা লেকের মতো স্বচ্ছ পানির হ্রদ।
যেভাবে যাবেন:
বান্দরবানে থেকে থানচি। সেখান
থেকে নৌকায় রেমাক্রিতে। এরপর
গাড়ি না যাওয়ায় হেঁটে যেতে হবে।
চলতি পথে নাফাখুম হয়ে জিনাপাড়া।
রাতে থেকে পরদিন খুব ভোরে
অমিয়াখুম আর সাতভাইখুমের দিকে
হাঁটা। সঙ্গে রশি, লাইফ জ্যাকেট,
খাবার নিন। ফিরতি পথে ‘পদ্মমুখ’
রাস্তা দিয়ে ফেরত আসতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে পাঁচ ঘণ্টা হেঁটে
থানচি পৌঁছাতে পারবেন। অমিয়াখুম ও
সাতভাইখুম ঘুরে আসতে চার দিন
লাগবে। গাইডদের প্যাকেজে গেলে
থানচি থেকে সব ঘুরে থানচিতে ফেরত
আসতে খরচ হবে ২৫০০-৩০০০ টাকা।
দুর্গম জায়গা বলে ভারী জিনস না
নেয়াই ভালো। এখানে হুটহাট ছবি
তুলবেন না। খেয়াল রাখবেন তাদের
সংস্কৃতিতে যেন কোনো আঘাত না
লাগে।

Comments

Popular posts from this blog

অল্প টাকায় করুন লাভ জনক ব্যবসা ৫ম পর্ব

আমদের দেশের সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বেকারত্ব,  আর এই বেকারত্ব এর দিক দিয়ে এগিয়ে আছে শিক্ষিত সমাজ। যারা অশিক্ষিত  তারা বিভিন্ন ছোট খাটো কাজ করে ঠিকি দিন পার করছে, তাই বলা যায় শিক্ষিত লোকি বেশি বেকার। তাই আমি কিছু অল্প টাকায় সম্মান জনক ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করলাম। অপ্ল টাকায় ইচ্ছে করলেই অনেক ব্যবসা করা যায়। তাহলে বসে না থেকে চলেন ব্যবসা করি। মোবাইলের চার্জার: আপনি অল্প টাকায় শুরু করতে পারেন মোবাইলের চার্জার এর ব্যবসা। আপনার এলাকায় যে মোবাইলের দোকান গুলো আছেএ, তাদের সাথে আলাপ করে তাদেরকে মোবাইল এর চার্জার সাপ্লাই দিতে পারেন। তার পর আস্তে আস্তে আপনার ইউনিয়নের মার্কেট দরতে পারেন। তার পর ফুল জেলা দরতে পারেন, আশা করি আপনার চাকুরির চেয়ে বেশি টাকা কামাতে পারবেন। মনে করেন- একটি মোবাইলের চার্জার কিনলেন ৫৫ টাকায়। আর বিক্রি করলেন ৬৫ টাকায়। তাহলে লাভ হচ্ছে ১০ টাকা। প্রতি দোকানিকে দিলেন ২০ পিস করে চার্জার, তাহলে ২০ দোকানিকে মাসে কমপক্ষে দিলেন ৪০০ চার্জার, তাহলে লাভ৪০০ গুন ১০ সমান ৪০০০ টাকা। ইয়ার ফোন : মোবাইলের ইয়ার ফোন কিনতে পারেন, ৫০-৫৫ টাকায়, তা বিক্রি করলেন ৬৫-৭০ টাকা...

তিউনিশিয়া

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ তিউনিশিয়া পূর্বে পর্যায়ক্রমে ফিনিশীয়, কার্থেজীয়, রোমান, বাইজান্টাইন, আরব, স্পেন এবং তুর্কিরা শাসন করে। খ্রিষ্টপূর্ব ১২ শতকে ফিনিশীয়রা উত্তর আফ্রিক...