কে না চায় সুখী দাম্পত্য! কিন্তু সবার
জীবনে কি আর সেই সুখ মেলে! তুচ্ছ
থেকে শুরু করে গুরুতর নানা বিষয়
নিয়ে বিষিয়ে ওঠে অনেক দম্পতির
জীবন। খুবই অপ্রত্যাশিতভাবে একের পর
এক নানা ঘটনা ঘটতে থাকে, যার
ফলাফল নিশ্চিত বিবাহ-বিচ্ছেদ।
বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আগে সাধারণত
যে ধরনের আলামত দেখা দেয়,
সম্প্রতি তা প্রকাশ করা হয়েছে টাইমস
অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে।
নয়টি আলামতের
কথা রয়েছে সেখানে।
অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি-
অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়ে যায়
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। কথার
আঘাতে একে অন্যকে ঘায়েল
করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা।
স্ত্রী তাঁর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের
একদমই সহ্য করতে পারেন না। ঠিক একই
আচরণ লক্ষ করা যায় স্বামীর মধ্যেও।
তুচ্ছ কারণে ঝগড়া-
ঝগড়া করার জন্য তুচ্ছ নানা কারণ
খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা শুরু
হয়ে যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। সামান্য
কোনো অভিযোগ পেলেই তুলকালাম
কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে উদ্যত হন তাঁরা।
একটা পর্যায়ে তাঁরা একে অন্যকে এড়িয়
চেষ্টা করেন। স্বামী কিংবা স্ত্রী ঘর
থেকে বের হলে একদমই
ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করে না তাঁদের। এসব
সমস্যার কোনো সমাধানও
তাঁরা দেখতে পান না।
মতের অমিল-
স্বামী-স্ত্রীর মতের অমিল প্রকট আকার
ধারণ করে।
যৌথভাবে কোনো সিদ্ধান্তই
তাঁরা নিতে পারেন না। দুজনই যাঁর যাঁর
অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য
ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিজের মতামত
ঠিক কি না, তা ব্যাখ্যা করার জন্য
কোনো যুক্তির আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন
তাঁরা অনুভব করেন না। মূলত ইগো সমস্যার
কারণেই এমনটা হয়। একপক্ষ
মনে করতে থাকে তাঁর আত্মমর্যাদায়
আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করছে অপর পক্ষ।
একে অন্যকে স্বার্থপর বলেও ভাবতে শুরু
করেন তাঁরা।
গোপন ঈর্ষা-
মনের অজান্তেই
চুপিসারে ঈর্ষা নামের বিষবাষ্প
ঢুকে পড়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের
মধ্যে। সঙ্গীর ওপর
থেকে আস্থা পুরোপুরি উঠে যায়।
একটা পর্যায়ে একে অন্যকে অবজ্ঞা করত
করেন তাঁরা।
আত্মকেন্দ্রিকতা-
স্বামী-স্ত্রী নিজ নিজ স্বার্থের
বাইরে আর কিছুই ভাবতে পারেন না।
নিজেকে উপেক্ষিত ও অনাহূত
বলে মনে করতে থাকেন তাঁরা।
সংসারকে আর নিজের বলে মনে হয় না।
একটা সময়ে স্বামী-স্ত্রীর
মধ্যে ‘আমাদের’ বলে আর কিছু
থাকে না। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠেন
দুজনই। এটা খুবই ভয়ংকর একটি বিষয়।
প্রতারণা-
বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আগে অনেক
ক্ষেত্রে স্বামী কিংবা স্ত্রীর কেউ
একজন প্রতারণার আশ্রয় নেন। পরকীয়ায়
জড়িয়ে পড়েন তাঁদের কেউ কেউ।
পরকীয়া ক্ষমার অযোগ্য একটি অপরাধ।
নিশ্চিতভাবেই
এটা বিয়ে এবং পরিবারকে ধ্বংস
করে দেয়।
আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু-
স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই যৌন মিলনের
আকাঙ্ক্ষা উবে যায়। আর যৌন সম্পর্ক
স্থাপিত হলেও সেখানে কোনো রকম
আবেগ কাজ করে না।
যৌনতাকে পুরোপুরি যান্ত্রিক
একটি প্রক্রিয়া বলে মনে হয় তাঁদের
কাছে। অথচ দাম্পত্য
জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার
ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের বিষয়টি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ।
সমস্যা পুঞ্জীভূত করার চেষ্টা-
সমস্যা সমাধানের কোনো ধরনের
উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন
না স্বামী কিংবা স্ত্রী। তাঁরা হাল
ছেড়ে দেন। একে অন্যের কাছ
থেকে পালিয়ে বেড়ান তাঁরা।
একটা পর্যায়ে সমস্যা সমাধানের
উদ্যোগ না নিয়ে বরং সমস্যা পুঞ্জীভূত
করার চেষ্টায় মেতে ওঠেন তাঁরা।
পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বিস্ফোরিত কবে হবে,
সেই প্রতীক্ষায় দিন গুনতে থাকেন।
সম্পর্কের কফিনে শেষ
পেরেকটি ঠুকে দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই
তাঁরা এমনটা করেন।
যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া-
পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ
করে দেন স্বামী ও স্ত্রী।
যে দাম্পত্যে একটা সময়ে কথার
ফুলঝুরি ঝরত, সেখানে ভর করে আশ্চর্য এক
নীরবতা। তাঁরা কথা বলা বন্ধ করে দেন
এবং একে অন্যের ছায়াও মাড়ান না।
কোনো দম্পতির মধ্যে এমন আলামত
দেখা যাওয়ার অর্থ হচ্ছে ফেরার আর
কোনো পথ নেই। নিশ্চিত বিবাহ-
বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন তাঁরা।
Comments
Post a Comment