নিজের চোখেই হোক আর
টেলিভিশনের পর্দাতেই হোক,
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য
আমাদের মাঝে যেমন
তৈরি করে ত্রাস, তেমনি এর সৌন্দর্য
আমাদের অবাক করে দেয়।
পৃথিবীতে বর্তমানে সক্রিয়
আগ্নেয়গিরি রয়েছে ১৫০০টি, এর
পাশাপাশি সুপ্ত
আগ্নেয়গিরি রয়েছে আরও অনেক।
একবার ভাবুন তো, পৃথিবীর সব
আগ্নেয়গিরিতে একযোগে অগ্ন্যুৎপাত
শুরু হয়েছে, আকাশ
ছেয়ে গেছে কালো ধোঁয়ায়। তখন এই
পৃথিবী আর মানব সভ্যতার
অবস্থাটা কেমন হবে?
গবেষকদের মতে, সবকিছু ধ্বংস
হয়ে যাবার সম্ভাবনাটাই বেশি।
পরিবেশ এতো খারাপ
হয়ে যাবে যে তার
মাঝে কোনো প্রাণ থাকার
আশা করা যায় না। মূলত ছায় আর
বিষাক্ত ধোঁয়া হবে জীবজগতের মৃত্যুর
কারণ।
আঁধারে ছেয়ে যাবে পৃথিবী। ঘন
ছাইয়ের মেঘে ঢেকে যাবে আকাশ।
সূর্যের আলো আসা বন্ধ
হয়ে যাবে সম্পূর্ণভাবে। এতে পৃথিবীর
তাপমাত্রা ভীষণ কমে যাবে, আলোর
অভাবে মরে যাবে গাছপালা। ১০
বছরের মতো এই অন্ধকার
অবস্থা থাকতে পারে পৃথিবীতে।
ছাইয়ের কারণে যদি সব
গাছপালা মারাও না যায়,
তারা মারা যাবে অ্যাসিড রেইনের
কারণে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে যে গ্যাস
উঠে আসে তারা হাইড্রোক্লোরিক
অ্যাসিড, হাইড্রোজেন ফ্লোরাইড,
হাইড্রোজেন সালফাইড এবং সালফার
ডাইঅক্সাইডে পূর্ণ থাকতে পারে,
যারা তৈরি করে অ্যাসিড রেইন। এই
অ্যাসিড রেইন পৃথিবীর সব পানি দুষিত
করে দিতে পারে,
মেরে ফেলতে পারে সামুদ্রিক
জীববৈচিত্র্য। শুধু তাই নয়,
অগ্ন্যুৎপাতে যে ছাই
ছিটকে আসবে তাতে সূর্যালোক
বাধা পেয়ে ঠাণ্ডা করে ফেলবে
পৃথিবীকে।
কিন্তু এই ঠাণ্ডা অবস্থার পরে আবার
আসবে উত্তপ্ত পরিবেশ।
অগ্ন্যুৎপাতে বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ে
গ্রিনহাউজ গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড,
এতে আবার ছাইয়ের
কারণে তৈরি শীতলাবস্থা কমে আসবে।
কিন্তু এতে খুশি হবার কিছু নেই।
পৃথিবীর
তাপমাত্রা এতো বেড়ে যেতে পারে
যে কোনো মানুষ বেঁচে থাকলেও তার
শরীর একেবারে সেদ্ধ হয়ে যাবার
উপক্রম হবে।
এমন দুর্যোগ যদি পৃথিবীর ওপর নেমেই
আসে, তবে কেউ কি বেঁচে থাকবে?
এটা হবে এক্সট্রিমোফাইল প্রাণীদের
জন্য ভালো সময়। এসব প্রানী ইতোমধ্যেই
খুব প্রতিকূল
পরিবেশে বেঁচে থাকতে অভ্যস্ত। অন্য
সবাই মরে সাফ হয়ে গেলেও
এরা বেঁচে থাকবে ঠিকই।
এই সময়ের মাঝে যদি মানুষের
প্রযুক্তি যথেষ্ট উন্নত হয় তবে কিছু
সংখ্যক মানুষ
হয়তো মহাকাশযানে অথবা মাটির
গভীরে কলোনি তৈরি করে থাকতে
পারবে, যতদিন না পরিবেশ আবার
শান্ত হয়ে মানুষের বসবাসের
উপযোগী হয়ে আসে।
Comments
Post a Comment